স্টাফ রিপোর্টার: নরসিংদীতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুবুল হাসানের জানাযায় মানুষের ঢল নেমেছে। জানাযার নামাজে হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের দাবী করেছে নিহতের স্বজনরা। বুধবার (২৯ মে) দুপুর ৩ টায় নরসিংদী সদর উপজেলার মেহেরপাড়া ইউনিয়নের স্থানীয় খালপাড় শাহী ঈদগাহে জানাযা শেষে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।
জানাযার নামাজে নরসিংদী-১ (সদর) আসনের সাংসদ লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু বীর প্রতিক, নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনের সাংসদ ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন ভূইয়া, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন ভূঁইয়া, নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন প্রমূখ।
এছাড়া আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাসহ হাজার হাজার মানুষ জানাযার নামাজে অংশ গ্রহন করেন।
জানাযায় যেন মানুষের ঢল নামে। খালপাড় শাহী ঈদগাহ মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। মুসুল্লিরা একে অপরের গায়ে গা লাগিয়ে প্রিয় এই নেতার জানাজায় অংশ নেয়।
জানাযার শেষে মেহেরপাড়া ইউপি সাবেক এই জনপ্রিয় চেয়ারম্যানকে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার সাথে শেষ বিদায় জানায় জেলার হাজার মানুষ। পরে তাকে ভগিরথপুর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ মে) দিবাগত রাত সোয়া ১২টার (বুধবার) দিকে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের সাথে মিটিং শেষে বাড়ি ফিরছিলেন সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসান। চেয়ারম্যান তার কয়েকজন কর্মীকে সাথে নিয়ে হেঁটে ভগিরথপুর নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্য পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা দূর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়।
ওই সময় সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে। পরে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা মাহাবুব চেয়ারম্যানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে তার মাথা শরীরে বিভিন্ন অংশে বড় বড় ক্ষত হলে অতিরিক্ত রক্তক্ষণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যূ হয়। এদিকে হামলাকারীরা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পাপ্পু ও ফরহাদ নামের আরও দুজন আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মাহবুবুল হাসান নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানাধীন ভগিরথপুর গ্রামের মৃত হামিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি মেহেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই বারের নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, স্থানীয় রাজনীতি ও এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে মাহাবুবুল হাসানের সাথে একই ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার অমিত প্রান্তের দ্বন্ধ চলে আসছিল। এর জের ধরে তাদের সমর্থকদের মধ্যে একাধিকবার ধাওয়া পাল্টাধাওয়া ও মামলা পাল্টা মামলার ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ৮ মে ১ম ধাপে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্ধ আরও প্রকট আকার ধারণ করে। এরই দ্বন্ধের জের ধরেই মাহবুবকে হত্যা করা হয় বলে দাবী করেন নিহতের ভাই হাফেজ মোহাম্মদ অলিউল্লাহ ।
নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক খোকন চন্দ্র সরকার বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুলকে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।